সংবাদ শিরোনাম :
বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তাল কুমারখালী, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন,, ❝সাংবাদিকতার আড়ালে প্রতারণা, “প্রতিদিন অপরাধ তথ্য” নাম ব্যবহার করে প্রতারণা ও বিভ্রান্তি করা যুবকের নাম  ইমরান মুন্সি ,, “ইচ্ছা-২০০৮” এর উদ্যোগে ১৪ তম ইফতার ও দোয়া মাহফিল এবং ঈদ সামগ্রী বিতরণ কুষ্টিয়া জেলার, কুমারখালী থানার , চৌরঙ্গীর লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো:শফিক ও তার ভাই রফিক সহ কয়েকজনার বিরূ‌‍‌দ্ধে  অবৈধ ভাবে জমি দখল ও  সহিংসতার ঘটনার ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। ৷৷৷৷৷ জরুরী নিলাম বিজ্ঞপ্তি৷৷৷৷৷৷৷ কুমারখালীর চৌরঙ্গীতে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবিনা খাতুন (৫০) নামে এক মহিলার নিহত হয়েছে । জবাবদিহি পত্রিকার ৮ম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে খোকসায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্কুল ছাত্র খুন৷ কোন আইন না মেনেই ইট ভাটা চালাচ্ছে নাজিম উদ্দীন মোল্লা, নিরব ভুমিকায় পরিবেশ অধিদপ্তর। অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে আইনের প্রয়োগ চাই ,কোন আইন না মেনেই ইট ভাটা চালাচ্ছে নাজিম উদ্দীন মোল্লা, নিরব ভুমিকায় পরিবেশ অধিদপ্তর।
কুষ্টিয়াতে কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহিণীরা ।

কুষ্টিয়াতে কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহিণীরা ।

‌এস এম কনক : 

—————————-

শীত আসতে না আসতেই গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়ে যায় শীতের সকালে কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম। গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এ দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।

 

কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহিণীরা। শীতকালীন রসনা বিলাসের অন্যতম সুস্বাদু খাদ্য কুমড়ার বড়ি। এখন শুধু গ্রাম অঞ্চলেই নয়, শহরেও কুষ্টিয়ার তৈরি কুমড়ার বড়ির চাহিদা অনেক।

 

এই কুমড়া বড়ির চাহিদা ঢাকার জেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবেও বড়ি তৈরি হচ্ছে। দেশব্যাপী কুমড়া বড়ির চাহিদা থাকায় কুষ্টিয়ায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমড়ার আবাদ হয়ে থাকে। এ কুমড়ো দিয়েই তৈরি করা হয় বড়ি।

 

প্রায় ২ যুগ ধরে এ বড়ি তৈরি করে কুষ্টিয়ার ৫ শতাধিক পরিবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সারা বছর ছাড়াও শীত মৌসুমে চাহিদা বেশি থাকায় কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কুষ্টিয়ার জগতি ও লাহিনীর ‘কুমড়া বড়ি পল্লীর’ সকলে। সেখানে শুরু হয়েছে শীতকালীন রসনা বিলাসের জন্য অন্যতম সুস্বাদু খাদ্য ‘কুমড়া বড়ি’ বানানোর ধুম।

 

শীতকালীন সব ধরনের তরকারিতে বাড়তি স্বাদের জন্য কুমড়া বড়ির কদর এখন গ্রাম ছাড়িয়ে শহরেও সমাদৃত হয় সমভাবে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব শ্রেণীর মানুষেরই নিত্যদিনের খাবারে তরকারির অতি প্রিয় অনুষঙ্গ এ কুমড়ার বড়ি।

 

মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের আয়েশা খাতুন বলেন, পাকা ও পরিণত চালকুমড়া কুঁরে তার সাথে মাস কালাই কিংবা কালাই বেঁটে পাঁচফোড়ন ও কালোজিরা দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা হয় এই কুমড়া বড়ি।

 

কুমড়া বড়ি তৈরিতে বেশ পরিশ্রম ও ঝক্কি ঝামেলাও পোহাতে হয় বাড়ির বৌ-ঝিদের। আবার বড়ি তৈরির পর যদি তীব্র রোদ কিংবা তাপ না থাকে তাহলে হাড়ভাঙা খাটুনি আর দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রম সবই বৃথা যায়। কেননা বড়ি বানানোর পর যত দ্রুত তা রোদের তাপে শুকানো যায় ততই সুস্বাদু হয় এই কুমড়া বড়ি।

 

দেখতে যেমন সুন্দর, খেতে তার চেয়ে বেশি সুস্বাদু। খুব সহজেই গ্রামের নারীরা তৈরি করে থাকেন।

 

প্রায় প্রতিটি সবজি বা মাছ রান্নায় দিলে বেড়ে যায় স্বাদ। বলা হচ্ছে কুমড়ো বড়ির কথা। শীতের শুরুতেই এ বড়ি তৈরি শুরু করেন কুষ্টিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের নারীরা। বাণিজ্যিকভাবে বড়ি বিক্রি করেও অনেকে সংসারে আনেন স্বচ্ছলতা।

 

একই এলাকার মালেকা খাতুন জানান, বছরে একবার এই কুমড়া বড়ি তৈরি করে থাকি। নিজেদের খাওয়া এবং মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে পাঠানো লাগে। এবারও বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো চালকুমড়া সংগ্রহ করে মাসকলাই মিশিয়ে এ কুমড়া বড়ি তৈরি করেছি।

 

অতি যত্নের সাথে গ্রামের নারীরা কুমড়া বড়ি তৈরি করে। জগতি এলাকার আনোয়ারা বলেন, এ ব্যবসায় সারাবছর চললেও ৬ মাস ভালো চলে। তবে পরিশ্রমের তুলনায় তারা তেমন মূল্য পান না।

 

মৌসুমি কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ী জগতি এলাকার সামু জানান, শীতকালে এ কুমড়ো বড়ি বিক্রি বেশি হয়। তাই বাড়িতে এসব বড়ি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করি। এখন প্রতিদিন আমি ১৫-২০ কেজি কুমড়ো বড়ি বিক্রি করি। সাদা বড়ির চাহিদা বেশি। ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি দরে এসব বড়ি বিক্রি করি। এভাবে পুরো শীত মৌসুম চলে বড়ি বিক্রি।

 

নুর মোহাম্মদ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বাজারের সাদা বড়িগুলো বেশিরভাগই ভালো হয় না। বিক্রেতারা কুমড়ার পরিবর্তে পেঁপে আর আটা মিশিয়ে থাকে। এজন্য আমি প্রতিবছর ডাল আর কুমড়া কিনে বাড়িতে বড়ি তৈরি করি। এ বছর আমি কুমড়া কিনেছি পাঁচটা, ৩০০ টাকায় আর কলাইয়ের ডাল কিনেছি ৬০০ টাকার। এতে কয়েক কেজি কুমড়ো বড়ি পাব। তা দিয়ে যা বড়ি হবে, পুরো শীতকাল খেতে পারব। তাছাড়া আত্মীয়-স্বজনদেরও দিতে হয়। বাড়িতে বানানো বড়ি বাজারেরগুলোর চাইতে অধিক স্বাদের হয়।

 

কুষ্টিয়ার তৈরি কুমড়ার বড়ি এখন গ্রামের বাড়ির আঙিনা ছেড়ে শহরে এমনকি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোর কাঁচা বাজারেও স্থান করে নিয়েছে।

 

কুষ্টিয়ার তৈরি বড়ি জেলার চাহিদা পূরণ করে প্রতিদিনই বাইরে পাঠানো হচ্ছে। এখানকার তৈরি বড়ি অত্যন্ত ভালো ও সুস্বাদু হওয়ায় দিনদিন বেড়েই চলেছে কুষ্টিয়ার কুমড়া বড়ির চাহিদা।

 

কৃষকের বন্ধু এসএম জামাল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে কুমড়ো বড়ি অনলাইনে বাজারজাত করে থাকেন। তিনি বলেন, গ্রামীণ পরিবেশে এই কুমড়ো বড়ি তৈরিতে সাড়ে ৫শ টাকার উপরে খরচ পড়ে যায়। এতে করে অন্তত কিছু নারীদের কর্মসংস্থান হয়ে যায়। এসব বড়ি ৬০০, টাকা কেজি হিসেবে অলাইনে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Jafu Enterprise